আমার ডাইরিঃদেওয়াল এবং পিঠ
"বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না,
বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি,
তাই যাহা আসে কই মুখে।
ই দানিং কেন জানিনা নজরুল ইসলামের কবিতার এই লাইনগুলো অচেতন ভাবেই দীর্ঘশ্বাসের সময় বার বার মুখদিয়ে বেরিয়ে পড়ছে! তাহলে কি কবি নজরুলের যে পরিস্থিতিতে এই রূপ অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়ে ছিল, সেই পরিস্থিতিই কি আমাদের ঘিরে বসেছে?
যাক ঐসব কথা। সেদিন মোহন বাবু তাঁর পরিবারের লোকজন নিয়ে একমাত্র সম্বল সাধের পেয়ারা বাগানে ঢুকলেন পেয়ারা তুলতে। পেয়ারা বেচেই তাঁর সংসার বেঁচে থাকে। হলুদ রঙের গাছ ভর্তি পেয়ারা দেখে মোহনবাবুদের সকলের প্রাণ জুড়িয়ে গেল। ছেলের স্কুল ফিস, মেয়ের জন্য গহনা, বৃদ্ধ মাতা-পিতার ঔষধ সব হবে এবার। কিন্তু হায়! সব পেয়ারা তো পোকা বিঁধা, ধরতেই চুপসে যাচ্ছে ; ভিতরে শাঁস-বীজ কিছু নেই। সময় মত কীটনাশক না দিলে যা হয় তাই হয়েছে।
আমরাও কি সময়মত কীটনাশক দিচ্ছি বা দিতে সাহস পাচ্ছি? মোহনবাবুর মত হাহুতাশ করা কেবল সময়ের অপেক্ষা। সবারই অজান্তে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী পোকাগুলো রাজকোষ উজার করে দিয়েছে। তাইতো সরকার বাহাদুরকে ক্রমাগত জ্বালানী তেলের উপর শুল্ক বাড়াতে হচ্ছে। আর কোন উপায় নেই এটাই শেষ অস্ত্র।
অথচ আমরা কীটনাশকের কথা ভাবছিই না। এশিয়ার একটা দেশে অস্বাভাবিক ভাবে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি হলে সেদেশে জনগন প্রতিবাদে পথে নেমে এসেছিল। আমরা দেখেছি, কিন্তু আমরা কিছু করতে সাহস পাইনি। এমতবস্থায়ও আমরা ধ্বজা নিয়ে কেবল মসজিদের মিনারের উপরে নাচছি, হিজাব খোলার জন্য বিদ্যালয়ের গেট আটকেছি। মসজিদে লাউডস্পিকার স্পিকার বন্ধের জন্য সরকারকে ধমক দিচ্ছি।
আর এই সবের ছায়ায় দুর্নীতির কীট তরতর করে তাজা হয়ে রাজকোষ শুণ্য করে দিচ্ছে।
এই সময় যদি দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে একমাস লকডাউনে চলে যায়, তবে সরকার বাহাদুর ঐ নীরব মোদীর মত দেশের বাহিরে হয়ে যাবেন। তখন শ্রীলঙ্কানদের মত নোনা বাতাসের ঝাঁজে নাক ও চোখ হতে জল গড়াতে থাকবে।
0 Comments